গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৭ মেয়র, ২৫৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৮৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে গত মঙ্গলবার প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
প্রতীক পেয়ে জনসংযোগে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। সকালে প্রতীক পেয়েই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী ২০ দলীয় জোটের বিএনপি মনোনীত হাসান উদ্দিন সরকার ও ১৪ দলীয় জোটের আওয়ামী লীগ মনোনীত অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ অপর প্রার্থীরা জনসংযোগে নেমে পড়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া শুরু হয়। এর পূর্বে রিটার্নিং অফিসার প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে নির্বাচনী আচরণবিধিসহ নানা নির্বাচন সংক্রান্ত নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে যান। এর আধাঘণ্টার পর দলীয় নেতাকর্মীসহকারে আসেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রথমে মেয়র প্রার্থী পরে সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন।
নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মন্ডল জানান, মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার (ধানের শীষ), ইসলামী ঐক্য জোটের ফজলুর রহমান (মিনার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন (হাতপাখা), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন (মোমবাতি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন (কাস্তে) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ (টেবিল ঘড়ি) প্রতিক পেয়েছেন।
এর মধ্যে ৭ প্রার্থী তাদের দলীয় নির্ধারিত প্রতীক পেয়েছেন। একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থীকে তার পছন্দের প্রতীক টেবিল ঘড়ি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া একই প্রতীকে একাধিক প্রার্থীর পছন্দ থাকলে সেখানে লটারির মাধ্যমে প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সহকারি রিটার্নিং অফিসার তারিফুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা করতে পারলেও কোনো দালান ও দালানের দেয়াল, বেড়া, যানবাহন, বিদ্যুতের খুঁটি বা গাছে আঠা বা অন্য কোন পদার্থ দ্বারা পোস্টার লাগানো যাবে না। তবে ভোট কেন্দ্র ব্যতীত নির্বাচনী এলাকার যে কোনো স্থানে পোস্টার, হ্যান্ডবিল, লিফলেট ঝুলাইতে বা বা টাঙাতে পারবেন।
কোনো অবস্থাতেই রঙিন পোস্টার ছাপানো বা লাগানো যাবে না। পোস্টারে নিজের ছবি ও প্রতীক ছাড়া অন্য কারো ছবি বা প্রতীক ছাপানো যাবে না। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টার বা লিফলেটে ছাপাতে পারবেন।
তবে পোস্টার ৬০ সেন্টিমিটার বাই ৪৫ সেন্টিমিটার সাইজের সাদা-কালো কাগজের পোস্টার দড়ি, সুতলি বা রশি দিয়ে ঝুলিয়ে বা টাঙিয়ে দেওয়া যাবে। পোস্টারের যে কোনো স্থানে মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, মুদ্রণের তারিখ, পোস্টারের মোট সংখ্যা অবশ্যই থাকতে হবে। নির্বাচনী প্রতীকের আকার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা কোনো অবস্থানেই তিন মিটারের অধিক হতে পারবে না।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মোট আয়তন ৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গকিলোমিটার। ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন ও মহিলা ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪২৫টি। ভোট কক্ষ ২ হাজার ৭৬১টি।
Leave a Reply