রাকিবুল ইসলাম সোহাগ -ঢাকার সাভারে নিজের ১০ মাস বয়সী সন্তানকে চুরি করে নিয়ে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে তার বাবার বিরুদ্ধে। এঘটনার চার দিন পর ভুক্তভোগী শিশুটিকে পুলিশ উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও আটক করা সম্ভব হয়নি অভিযুক্ত বাবাকে।
তবে আবারও সন্তান চুরি হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে থাকলেও নিজের শারিরীক অসুস্থতা ও শিশু সন্তানের দেখভাল করার কথা চিন্তা করে মামলা করতে রাজি হননি তিনি।
সোমবার ভুক্তভোগী নারী সাভারের শাহীবাগ এলাকার বাসিন্দা ফুলময় বালা দাস এসব কথা জানান। স্বামী ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা ইউনিয়নের সজিব খান মুসলমান একটি মেয়েকে বিয়ে করে নাম পাল্টেছে।
বছর খানেক আগে থেকেই ফুলময়কে ভরণপোষণ দেয়াও বন্ধ করে দিয়েছে সে। মাদকের টাকা যোগাতে সম্প্রতি গার্মেন্টস থেকে পাওয়া মাতৃত্বকালীন টাকার একটা অংশ সজীব জোর করে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন ফুলমতি।
তিনি বলেন, আমি একটি গার্মেন্টসে চাকরি করি। আমার স্বামী বাসের স্টাফ। গত এক বছর ধরে সে আমাকে কোন প্রকার ভরণপোষণ না দিয়ে গোপনে বিয়ে করে দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে সংসার করছে।
ডেলিভারির সময় আমি আরেকজনকে সাথে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সিজার করিয়েছি। এরপর গার্মেন্টস থেকে ৬০-৭০ হাজার মাতৃত্বকালীন ভাতা পেয়েছিলাম। এর আগে এসে সেখান থেকে কিছু টাকা জোর করে নিয়ে গেছে সে।
ফুলময় আরও অভিযোগ করেন, আমার ১০ মাস বয়সী মেয়ে শ্রী তমা দত্তকে পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়ার কাছে মাসিক ৩ হাজার টাকায় দেখভালের জন্য রাখি। ও জন্মের পর থেকে এভাবেই অফিসে যাই।
গত ৩০ আগস্ট দুপুরে কৌশলে আমার মেয়েকে চুরি করে নিয়ে যায় আমার স্বামী। খোঁজ না পেয়ে পরদিন সাভার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।
পরে পুলিশ রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে আমার বাচ্চাকে আজ উদ্ধার করে দেয়। এক দম্পতির কাছে ৮০ হাজার টাকায় আমার সম্তানকে বিক্রি করেছিলো আমার স্বামী।
এসময় ফুলময় আতঙ্ক জানিয়ে বলেন, আমরা স্বামী আবারও আমার সন্তানকে চুরি করতে পারে। আমি এখন কিভাবে ওরে অন্যের কাছে রেখে গার্মেন্টসে যাব?
তাহলে মামলা করেননি কেন এমন প্রশ্নে বলেন, আমিতো অসুস্থ। কিভাবে আদালতে যাতায়াত করব? আর বাচ্চাটারে দেখব কখন, গার্মেন্টসে যাব কখন? তাই মামলা করিনি। তবে জিডি করেছি।
সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান সিকদার বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার উত্তরা থেকে শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার বাবা সজিবকে পাওয়া যায়নি। এঘটনায় যে দম্পতি শিশুটিকে দত্তক নিয়েছিলো তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া শিশুটির মা মামলা করতেও রাজি হায়নি।
Leave a Reply