রাকিবুল ইসলাম সোহাগ -অজ্ঞাত লাশের পরিচয় নিশ্চিত ও এর রহস্য উন্মোচনসহ হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। লিঙ্গ পরিবর্তন করে বসবাসের সময় সম্পর্কের বিরোধের জেরে হত্যা করা হয় ওই যুবককে। এ হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনে গিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর বিষয় লিঙ্গ পরিবর্তনকারী চক্রের সন্ধান পায় পিবিআই।
নওশাদকে হিজড়া হওয়ার প্রস্তাব দেয় এবং বলে হিজড়া হলে সে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবে। দেলু হিজড়ার কথায় প্রলুব্ধ হয়ে নওশাদ হিজড়াদের দলে যোগ দেয়। এর দেড় বছর পর দেলু হিজড়ার কথামত খুলনার লোহাপাড়ায় একজন ডাক্তারের মাধ্যমে অপারেশন করে মেয়ে হিজড়া হয়। সে ডাক্তার অনেক লোককে অপারেশন করে হিজড়া বানিয়েছে। হিজড়া হওয়ার পরে নওশাদ তার নাম পরিবর্তন করে চম্পা নাম ধারণ করে দেলু হিজড়ার অধীনে ৪/৫ বছর কাজ করে।
পরবর্তীতে সে ঢাকার আগুলিয়ার এনায়েতপুরে গিয়ে বসবাস শুরু করে। আশুলিয়ার এনায়েতপুরে বসাবাসকালে নিহত রাকিব হাসান শাওন এর সাথে তার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ওঠে এবং স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তারা একসাথে ভাড়া বাসায় বসবাস করতে শুরু করে। নিহতের খরচ চম্পা বহন করতো। ২০২১ সালে ১লা জুন ভিকটিম রাকিব তার নিকট ১ হাজার টাকা চায়। টাকা না দেওয়ায় নিহত রাকিব তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। পরে রাকিব বাসা থেকে বের হয়ে ওষুধ কিনতে যায়। যাওয়ার সময় তার মোবাইল ফোনটি বাসায় রেখে যায়। ঐ সময় নিহতের মোবাইলে রিপা নামের একজন তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি ফোন করে। চম্পা ফোনটি রিসিভ করে জানতে পারে, রিপার সাথেও রাকিবের প্রেমের সম্পর্ক সহ শারিরীক সম্পর্ক রয়েছে।
ওষুধ কিনে রাকিব বাসায় ফিসে আসলে চম্পা নিহত রাকিবের নিকট রিপার বিষয়ে জানতে চায়। এই নিয়ে তাদের মধ্যে বাতবিতণ্ডা হলে চম্পা নিহত রাকিবের গলায় গামছা পেচিয়ে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর আসামী নওশাদ তার গুরুমা রুমি হিজড়ার বাসা থেকে চটের বস্তা নিয়ে এসে উক্ত বস্তায় রাকিবের লাশটি ভরে পাশের রুমে রেখে গুম করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। কেউ যেন কিছু বুঝতে না পারে তার জন্য সে দিনের বেলা তার কাজকর্ম শেষ করে বাসায় ফিরে এসে রাত্রী যাপন করতো। ৫ দিন পর ৬ষ্ঠ দিনের মাথায় প্রচন্ড বৃষ্টির কারণে সন্ধার পরে এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় সে বস্তায় ভরে রাখা লাশটি নিয়ে এসে রাতের অন্ধকারে বাসার পাশে ঝোপের মধ্যে (ঘটনাস্থলে) ফেলে রেখে সে তার স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে থাকে। পরের দিন সকালে স্থানীয়রা বস্তাবন্দি লাশ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দিলে চম্পা পালিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানা এলকার হিজড়া পল্লিতে গিয়ে নাম পরিবর্তন করে স্বপ্না হিজড়া নামে আত্মগোপণ করে।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ কুদরত-ই- খুদা জানান, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামী নওশাদ ওরফে চম্পা হিজড়াকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে সে ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে বিজ্ঞ আদালতে অপরাধ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
Leave a Reply