
গাজীপুরে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা, পিবিআই কর্তৃক মামলার রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি।
গাজীপুর মহানগরে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটনপূর্বক দীর্ঘ ০২ বছর পরে আসামিকে গ্রেফতার করলো পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর জেলা। গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম মোঃ রমজান আলী (২৬)। গত ইং ১১/০৯/২০২৫ খ্রি. তারিখে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন নলজানী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ভিকটিম উমর ফারুক (১৭) গত ইং ২১/০৫/২০২৩ তারিখ রাত ০৭:৩০ ঘটিকায় বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরদিন ইং ২২/০৫/২০২৩ তারিখ সকাল ০৬:০০ ঘটিকায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, অজ্ঞাত কয়েকজন ব্যক্তি ভিকটিমকে নৃশংসভাবে মারপিট করে গুরুতর জখম করে রাস্তায় ফেলে যায়। অজ্ঞাতনামা লোকজন ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা মোঃ রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জিএমপি সদর থানা পুলিশের তদন্তে মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘটিত না হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত স্ব- প্রনোদিত হয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই গাজীপুর জেলাকে নির্দেশ প্রদান করেন।
পিবিআই প্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল এঁর তত্ত্বাবধান ও দিক-নির্দেশনায় এবং পিবিআই গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আবুল কালাম আজাদ এঁর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ রাফিকুল ইসলাম জামান তদন্ত করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতায় এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত মূল আসামিকে সনাক্ত করতঃ মামলার সাক্ষ্য প্রমান সংগ্রহ করতে সক্ষম হন। ঘটনার সাথে জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ রমজান আলী (২৬) , কে জিএমপি বাসন থানাধীন নলজানী এলাকা হতে গত ১১/০৯/২০২৫ খ্রি. তারিখ গ্রেফতার করা হয় এবং ১২/০৯/২৫ খ্রি. তারিখে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে আসামি ভিকটিম মোঃ উমর ফারুক কে হত্যাকান্ডের সাথে নিজেকে সহ অন্যান্য আসামিদের নাম জড়িয়ে হত্যা কান্ডের বিস্তারিত বর্ণনা করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদান করে।
পিবিআই এর তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ, তথ্য-প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞ আদালতে আসামীর প্রদানকৃত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী পর্যালোচনায় জানা যায় যে, ভিকটিম উমর ফারুক (১৭) কে গত ২১/০৫/২০২৩ তারিখ রাত ১১:০০ ঘটিকার দিকে আসামী মোঃ রমজান আলী এক ব্যক্তির দোকানে চুরিরত অবস্থায় হাতে নাতেনাতে ধরে। আসামী দোকান মালিক আব্দুর রহমানকে মোবাইল ফোনে চুরির ব্যাপারে অবহিত করলে আব্দুর রহমান ও তার ছেলে বাবু ঘটনাস্থলে আসে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিম মোঃ উমর ফারুক পূর্বেও এই দোকানে চুরির কথা স্বীকার করে । পরে সকলে মিলে ভিকটিমকে বাঁশ দিয়ে মারধর করলে এক পর্যায়ে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা প্রক্রিয়াধীন আছে।
মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply