পীরগাছায় সরকার কর্তৃক ভূমিহীনদের দেওয়া জমি বেদখলের অভিযোগ
পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি:
২০১৩ সাল, ভূমিহীন রফিক ও মোমেনা খাতুন দম্পত্তিকে পাঁচ শতক জমি সরকারিভাবে দেওয়া হয়েছে বসবাসের জন্য। তৎকালিন এক ইউপি চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাদের বসবাসের জন্য পাঁচ শতক জমি ভূমিহীন বন্দোবস্তের দলিলমূলে আগামী ২১০৯ সাল অর্থাৎ ৯৯বছরের জন্য বুঝিয়ে দেন। যার মৌজা মকসুদ খাঁ, খতিয়ান-১, দাগ নং-৭০২/১০৮৮, জমির পরিমাণ পাঁচ শতক।
সেই পাঁচ শতকের মধ্যে এক অংশ মিঠাপুকুর উপজেলার সীমানায় রয়েছে বাকি তিন অংশ পীরগাছা উপজেলায় সীমানায় পড়লেও আজও দখলে নিতে পারেননি ভূমিহীন রফিক ও মোমেনা খাতুন দম্পত্তি। স্থানীয় প্রভাবশালীর কাছে পরিবারটি আজ অসহায়! ক্ষমতাবলে জায়গাটি প্রভাবশালীরা ভোগদখল করে আছে বলে দাবি করেন ভূক্তভোগী ওই পরিবারটি।
ঘটনাটি উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের মোংলাকুটি (শুল্লিপাড়া-গুচ্চগ্রামের)। জমি উদ্ধার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে ১০০জনের গণস্বাক্ষর সম্বলিতসহ একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী রফিক মিয়া।
অভিযোগে জানা যায়, ২০১৩ সালে তৎকালিন কৈকুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম লেবু মন্ডল ও ভারপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) শহিদুল ইসলাম ভূমিহীন রফিক ও মোমেনা খাতুন দম্পত্তিকে পাঁচ শতক জমি সরকারিভাবে বন্দোবস্ত করে দেন। সেই থেকে তারা সেখানে বসবাস করে আসছে। বসবাস করাকালীন গৃহহীনদের জমির উপর অর্থাৎ পীরগাছা সীমানার অংশে স্থানীয় প্রভাবশালী কাজি মিয়া ও তার সহযোগীরা ইউক্যালিপ্টাস গাছ রোপন করেন। গাছ রোপনে বাধা দিলে তারা বাধা উপেক্ষা করেন।
সেই গাছ আজ বিশাল অর্থে পরিণত হয়েছে। বিধায় তারা মাসখানেক আগে কাজি মিয়া ও সহযোগীরা মিলে ৪৫টা ইউক্যালিপ্টাস গাছ কেটে সাবাড় করেন। ভূক্তভোগী রফিক মিয়া অভিযোগ করে বলেন, এই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান বরখাস্তকৃত ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বসুনিয়ার হুকুমে স্থানীয় অভিযুক্ত প্রভাবশালী গাছগুলো কেটে বিক্রি করে দেয়।
অভিযুক্ত কাজি মিয়ার সাথে যোগাযোগ করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বসুনিয়ার বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আর আমি কাউকে হুকুমও দেইনি।
এ ব্যাপারে তৎকালিন কৈকুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম লেবু মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পীরগাছা উপজেলার সীমানায় কিছু জায়গা পাবে রফিক মিয়া। মেপে দেখলে বুঝা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হক সুমন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ভূমিহীনদের কবুলিয়ত দেওয়া জমি বেদখল করে রাখার সুযোগ নেই। বিষয়টি প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply