নিউজ ডেস্ক -“নিখোঁজ জিডি সূত্রে নিখোঁজের ১৩ দিন পর পুকুরে পুতে রাখা লাশ উদ্ধার, ০৩ জন আসামী গ্রেফতার ও বিজ্ঞ আদালতে আসামীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান”
সূত্রঃ বগুড়া জেলার শাজাহানপুর থানার মামলা নং-৪০, তারিখ-২৯/০৯/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা- ৩৬৪/৩০২/৩৪ পেনাল কোড।
বাদীনির ছেলে মোঃ সাগর ইসলাম (২৩) প্রতিদিনের ন্যায় বাদীনির বাড়ীতে রাতের খাবার খেয়ে বাড়ীতে অবস্থান করাকালে গত ১৬/০৯/২০২৩ খ্রিঃ রাত্রি অনুমান ০৭.৪৫ ঘটিকার সময় বাদীনির ছেলে বাড়ীর বাইরে চলে যায়। বাদীনি রাতে ঘুমিয়ে যায় এবং পরের দিন অর্থাৎ ১৭/০৯/২০২৩ খ্রিঃ সকালে জানতে পারেন ডিসিস্ট সাগর গতরাতে বাড়ীতে ফিরে আসে নাই। বিষয়টি বাদীনি তার দেবর আবু রায়হান’কে অবহিত করে। বাদীনি তার নিকট আত্নীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের নিকট সাগরের সন্ধান করে। পরবর্তীতে, ডিসিস্ট সাগর ইসলামের কোন সন্ধান না পাওয়ায় শাজাহানপুর থানায় হাজির হয়ে সাধারন ডায়রী করেন। যাহার ডায়েরী নম্বর-১৪৩৭, তারিখ- ২৩/০৯/২০২৩ খ্রিঃ। অ্যাডিশনাল আইজিপি পিবিআই প্রধান জনাব বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পুলিশ সুপার, পিবিআই বগুড়া জনাব কাজী এহসানুল কবীর এর সার্বিক সহযোগিতায় উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ নাজমুল হক নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে জিডিটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ আবু মুছা (৩৮), পিতা- মৃত ছলিম উদ্দিন, গ্রাম- খাদাস পশ্চিমপাড়া, থানা-শাজাহানপুর, জেলা- বগুড়াকে সনাক্ত করা হয় যে ডিসিস্ট এর অবস্থান জানতে পারে বলে ধারণা করা হয়। ডিসিস্টকে উদ্ধারের লক্ষ্যে তার প্রতিবেশী মোঃ আবু মুছা’র অবস্থান সংক্রান্তে স্থানীয়ভাবে গোপন ও প্রকাশ্য তদন্তকালে জানা যায় যে, ঘটনার পরবর্তী সময় হইতে সে অত্র এলাকা হইতে অন্য এলাকায় আত্নগোপন করে রয়েছে। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে মোঃ আবু মুছা ঢাকা জেলার সাভার, আশুলিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময়ে অবস্থান করে আত্নগোপণে আছেন। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে সুত্রে বর্ণিত মামলার মুল রহস্য ও ডিসিস্ট সাগর ইসলামের অবস্থান জানা সংক্রান্তে পিবিআই এর উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত ২৯/০৯/২০২৩ খ্রিঃ রাত্রী ০২.৩০ ঘটিকায় ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন হেমায়েতপুর নতুনপাড়া এলাকা থেকে আসামী আবু মুছাকে গ্রেফতার করা হলে তিনি জানান, পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক তিনি সহ সহযোগী অন্যান্য আসামীগণ ডিসিস্ট সাগর ইসলাম’কে হত্যা করে শাজাহানপুর থানাধীন খাদাশ (পশ্চিমপাড়া) গ্রামস্থ কন্ঠশিল্প কনক চাপার বসতবাড়ি সীমানা প্রাচীরের পূর্বপাশে জৈনক মোঃ মোজাফফর হোসেন এর পুকুরে কাদামাটি দিয়ে চাপা দিয়ে উপরে কচুরীপনা দিয়ে ঢেকে রেখেছে। গত ২৯/০৯/২০২৩ খ্রিঃ দুপুর ১৩.৩০ ঘটিকার সময় আসামী মোঃ আবু মুছার কথিত মতে পুলিশ সুপার,পিবিআই,বগুড়া, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন ইলেক্ট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে প্রকাশ্য দিবালকে ১৩.৪৫ ঘটিকায় ধৃত আসামী মোঃ আবু মুছা এর দেখানো মতে কন্ঠশিল্প কনক চাপার বসতবাড়ি সীমানা প্রাচীরের পূর্বপাশে জৈনক মোঃ মোজাফফর হোসেন এর পুকুরে কচুরীপনা দিয়ে ঢাকা ও কাদামাটির নিচ হইতে ডিসিস্ট সাগর ইসলামের অর্ধ গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আসামী মুছার তথ্যের ভিত্তিতে আসামী ১। মোঃ কালাম (২৬), পিতা- মোঃ আজিজার রহমান, গ্রাম- খাদাস পশ্চিম পাড়া ২। মোঃ বাবলু হোসেন (২৫), পিতা- মৃত হায়দার আলী, গ্রাম- খাদাস আলুবাড়ী, সর্ব থানা-শাজাহানপুর, জেলা- বগুড়াদ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়।
এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। গ্রেফতারকৃত আসামীগণের জবানবন্দীতে জানা যায় যে, হত্যাকান্ড সংঘটনের প্রায় একমাস পূর্বে গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীগণ ডিসিস্ট সাগর ইসলামকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ১৬/০৯/২০২৩ খ্রিঃ রাত্রী অনুমান ০৮.১৫ ঘটিকায় আসামী মোঃ আবু মুছা কৌশলে ডিসিস্টকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে ডিসিস্ট সাগর ও সকল আসামীগণ খাদাশ পশ্চিমপাড়া গ্রামস্থ তেতুলতলায় বসে মাদক সেবন করে। এরপর একজন আসামী ডিসিস্ট সাগর’কে কৌশলে কন্ঠশিল্পী কনকচাপা’র বাড়ীর দক্ষিন পাশে জামতলায় নিয়ে যায় এবং সেখানেই ডিসিস্ট সাগরকে প্রথমে গলায় গামছা পেচিয়ে হত্যার চেষ্টা করে এবং ডিসিস্ট বেঁচে আছেন এমন সন্দেহ হলে দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে জৈনক মোঃ মোজাফফর হোসেন এর পুকুরে কাদামাটি দিয়ে চাপা দিয়ে উপরে কচুরীপনা দিয়ে ঢেকে রাখে।
গ্রেফতারকৃতদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামীগণ ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। পলাতক অন্যান্য আসামীদেরকে গ্রেফতারের অভিযান চলমান আছে।
Leave a Reply