সাভারে হারিয়ে যাওয়া শিশুকে বাকপ্রতিবন্ধী মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল সাভার থানা পুলিশ
ঢাকার সাভারে মুস্তাকিন (৪) নামে হারিয়ে যাওয়া একটি ছেলে শিশুকে বাক-প্রতিবন্ধী মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
সোমবার রাতে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ শাহজামান থানা প্রাঙ্গনে শিশুটিকে তার মা মমতাজ বেগমের হাতে তুলে দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাশিদ, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন ও ডিউটি অফিসার এসআই মাজহার।
রবিবার বিকেল ৩ টার দিকে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
হারিয়ে যাওয়া মুস্তাকিন মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার পশ্চিম বাহাদুরপুর গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে। মুস্তাকিন এর মা বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় অন্যত্র বিয়ে করে ঢাকায় বসবাস করছেন জাকির। তিন সন্তানের জননী বাক-প্রতিবন্ধী মমতাজ বেগম অন্যের বাড়িতে বুয়ার কাজ করে সাভার পৌরসভার নামা বাজার উত্তর পাড়া মহল্লায় ভাড়া থাকেন।
বাক-প্রতিবন্ধী মমতাজ ও জাকির হোসেন দম্পত্তির হারিয়ে যাওয়া শিশু মুস্তাকিন (৪) ছাড়াও আব্দুল মোবিন(১০) ও মুন্না (৭) নামের দুইটি শিশু সন্তান রয়েছে। মায়ের সঙ্গে তারাও ছোট ভাইয়ের জন্য কান্না করছিল।
মুস্তাকিন এর মা বাকপ্রতিবন্ধী মমতাজ তার বড় ছেলে আব্দুল মোবিনের মাধ্যমে জানায়, ১৪ বছর আগে পারিবারিকভাবে জাকির হোসেনের সঙ্গে বাক-প্রতিবন্ধী মমতাজ এর বিয়ে হয়। তাদের সংসার আলোকিত করে তিনটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
তিন বছর পূর্বে জাকির হোসেন পরকীয়ায় জড়িয়ে অন্যত্র বিয়ে করেন। এরপর থেকেই অর্থকষ্টে মা মমতাজ ও তিন ছেলে সন্তানের ভরণপোষণের জন্য বাসা বাড়িতে বুয়ার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আর রোববার দুপুর থেকেই ছেলেটি নিখোঁজ ছিল। তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার গভীর রাতে সাভার মডেল থানা পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে থানায় যোগাযোগ করেন মা বাক প্রতিবন্ধী মমতাজ বেগম। পরে মুস্তাকিনকে তার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় ছেলেকে পেয়ে খুশিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মমতাজ বেগম। কষ্টের মুহূর্তেও নারী ছেরা ধন অবুঝ মুস্তাকিনকে কোলে পেয়ে থানা পুলিশকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলে যায়নি বাকপ্রতিবন্ধী এই মা।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, রোববার দুপুরে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে দায়িত্বরত অবস্থায় ঘোরাফেরা করতে দেখে মুস্তাকিনকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। পরবর্তীতে থানা পুলিশের কয়েকটি টিম ছেলেটির বিষয়ে পরিবারের সন্ধান চেয়ে মাঠে নামে। পাশাপাশি স্থানীয় মসজিদ মাদ্রাসাতেও খবর দেয়া হয়। খোঁজখবরের এক পর্যায়ে সোমবার রাতে জানা যায় ছেলেটির অভিভাবক বাক-প্রতিবন্ধী মা মমতাজ বেগম।
Leave a Reply