নিজস্ব প্রতিনিধি-আশুলিয়ায় বকেয়া বেতন সহ বিভিন্ন দাবীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ সংঘর্ষ র্যাবের গাড়ি ভাংচুর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ আহত ৩০
আশুলিয়ায় শ্রমিক বিক্ষোভ সংঘর্ষে আহত অন্তত ৩০
ঢাকার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে একটি কারখানার কর্মী ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এসময় সেই কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর, র্যাবের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেনাবাহিনীর একটি গাড়িও।
র্যাব-৪ (সিপিসি-২) রোববার রাতে জানায়, বিক্ষোভরত শ্রমিকদের শান্ত করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এসময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।
পুলিশ জানায়, বকেয়া বেতন পরিশোধ, অতিরিক্ত ডিউটির টাকা বৃদ্ধি, ছুটি বাড়ানোসহ ১৬ দফা দাবিতে এদিন সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছিলেন আশুলিয়ার শিমুলতলা এলাকার তৈরি পোশাক কারখানা বেঙ্গল গ্রুপের ইউফোরিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেডের কর্মীরা।
বিকেলের দিকে স্টাফদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে উত্তপ্ত হতে শুরু করে পরিস্থিতি। একপর্যায়ে রাতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কারখানায় ভাঙচুর চালান বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও তাদের সংঘর্ষ হয়।
ইউফোরিয়া গার্মেন্টসের এক শ্রমিক বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে টিফিন বিল, রাত্রিকালীন অতিরিক্ত ডিউটির টাকা বৃদ্ধি, ছুটি বাড়ানোসহ নানা দাবি নিয়ে মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা চলে। গত পরশুদিন মিটিংয়ের সময় আমাদের এক সহকর্মীকে অন্যায় ভাবে মারধর করেন কারখানার স্টাফরা। এছাড়া প্রতি মাসের ৭ তারিখ আমাদের বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও মালিকপক্ষ সময়মতো বেতন পরিশোধ করছেন না।
‘গতকাল মালিকপক্ষ শ্রমিকদের আংশিক বেতন পরিশোধ করলে সবাই উত্তেজিত হয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পরও মালিকপক্ষ আমাদের দাবি না সবাই ভেতরে অবস্থান নেই। এসময়, সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা এসে এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে আমাদের অন্তত ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।’
র্যাব-৪ সিপিসি ২ সাভার ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর জালিস মাহমুদ খান বলেন, ‘আমরা এবং যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সমন্বয় করে তাদের (শ্রমিক) বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু বিকেলের দিকে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। তখন গার্মেন্টস থেকে তাদের ডিসপাস করার চেষ্টা করি৷ পরবর্তীতে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
‘র্যাবের একটি গাড়িতে ভাঙচুর এবং আগুন দেয়। আমরা আগুন নেভাতে সক্ষম হই। এসময় সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতেও তারা ইটপাটকেল ছোড়ে। আমাদের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন, তবে এটা মেজর না।’
পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গার্মেন্টস সেক্টরে অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের শনাক্তে আমাদের ছায়াতদন্তের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এর পেছনে মদদদাতাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Leave a Reply