ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় এক তরুণীকে ডেকে নিয়ে গনধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে চার তরুণের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত তরুণরা ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সোহাগী ইউনিয়নের চট্টি গ্রামের বাসিন্দা। নির্যাতনের শিকার তরুণী (১৯) জেলার গৌরীপুর উপজেলার বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে জেলার ঈশ্বরগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের পর ওই তরুণীকে মাঠে নিয়ে মারধরের সময় স্থানীয় এক কৃষক দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
কৃষক জুয়েল মিয়া বলেন, “রাতে জমিতে সেচ দিতে গিয়ে একটি মেয়ের চিৎকার শুনতে পাই। টর্চের আলোতে চার তরুণ ও এক তরুণীকে দেখি। তারা সবাই আমার এলাকার ছেলে। আমি ‘কে কে’ বলে চিৎকার করতেই মেয়েটি দৌড়ে আমার কাছে এসে বলতে থাকে, ‘বাবা আমারে বাঁচাও’। তখন চার তরুণ দৌড়ে পালিয়ে যায়। মেয়েটি আমাকে জানায়, চার তরুণ তাকে ধর্ষণ করেছে।”
শুক্রবার বিকেলে ভুক্তভোগী তরুণী সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোকে বলেন, “প্রায় এক বছর আগে মোবাইল ফোনে ইজিবাইকচালক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে আমাকে ডেকে নিয়ে আসে। মাগরিবের আজানের পর চট্টি গ্রামের একটি বাড়িতে নেওয়া হয়। বাড়িতে কেউ ছিল না। জাহাঙ্গীরের সঙ্গে আরও দুইজন ইজিবাইকে ছিলেন, বাড়িটিতে অবস্থান করছিলেন আরও একজন। চারজন মিলে সেখানে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করে।”
ওই তরুণী জানান, একপর্যায়ে তাকে ঘর থেকে একটি খোলা মাঠে নিয়ে মারধর করতে থাকে ওই চারজন। ছেড়ে দেওয়ার জন্য কান্নাকাটি করলেও তারা বিকাশের মাধ্যমে টাকা এনে দিতে বলে। কিন্তু মা–বাবা মোবাইল ফোন চালায় না জানালে বেদম মারতে থাকে। ওই অবস্থায় একজন ব্যক্তি সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করেন। তা না হলে তারা হয়তো তাকে মেরে ফেলতেন।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্ত চার তরুণ হলেন- সোহাগী ইউনিয়নের চট্টি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (২৪), শান্ত মিয়া (১৯), জীবন মিয়া (২২) ও মো. নাঈম মিয়া (১৯)। তাদের মধ্যে জীবন ও নাঈম কৃষিকাজ করেন এবং জাহাঙ্গীর ও শান্ত ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালান। ঘটনার পর থেকে চার তরুণই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
যে বাড়িতে নিয়ে তরুণীকে নির্যাতন চালানো হয় সেই নাঈমকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার দাদি বলেন, “আমার নাতি রাইত থাইকা বাড়িত নাই। এই কাম সে অন্যদের পাল্লায় পড়ে করছে।”
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ওবায়দুর রহমান সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোকে বলেন, “ঘটনাটি জানার পর মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসতে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
Leave a Reply