
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিমপুর থানার নবনিযুক্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা মোহাম্মদ খালিদ হোসেন যোগদানের পর এলাকাজুড়ে অপরাধ দমনে নতুন ধারা ও কঠোর অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে মাদক সিন্ডিকেট, দেহ ব্যবসার নেটওয়ার্ক ও কিশোর গ্যাং কার্যক্রমের বিরুদ্ধে টানা অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে সচেতন মহল পর্যন্ত ব্যাপক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে একাধিক মাদক স্পট চিহ্নিত করে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, বেড়েছে সন্দেহভাজন অপরাধীদের নজরদারি, এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা হয়েছে।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা ও প্রতিক্রিয়া,
কাশিমপুরের একাধিক বাসিন্দা জানান, “এখানে আগে রাত নামলেই ভয় ছিল – মাদক, বখাটে আর হুমকি। ওসি খালিদ দায়িত্ব নেওয়ার পর পুলিশের উপস্থিতি বেড়েছে, রাস্তাঘাট এখন অনেকটাই নিরাপদ মনে হয়।”
স্থনীয় ব্যবসায়ী একাব্বর আলী বলেন,
“বাজার এলাকায় চাঁদাবাজি কমেছে। সন্ধ্যার পর দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরত নিয়ে আগের মত উদ্বেগ নেই।”দ
মাদকের সাপ্লাই চেইন ভাঙা ও কিশোর গ্যাংয়ের রিক্রুটমেন্ট বন্ধ করা – এই দুই কাজ দীর্ঘমেয়াদে অপরাধ কমাতে সবচেয়ে কার্যকর। ওসি খালিদের অভিযানগুলো দেখে মনে হচ্ছে তিনি শুধু অ্যাকশন না, ‘কন্ট্রোল স্ট্র্যাটেজি’ নিয়েও ভাবছেন।”
এ বিষয়ে কাশিমপুরের সংবাদকর্মী সাংবাদিক জামাল আহমেদ বলেন,“শুধু অভিযান চালালেই হয় না – বিচার, রিমান্ড, চার্জশিট – সব জায়গায় ফলোআপ প্রয়োজন। ওসি খালিদ মাঠের পাশাপাশি ডকুমেন্টেশনেও কঠোর নজর দিচ্ছেন, এটিই মূল পার্থক্য।”
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যান সংগঠন বিএসকেএস এর কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক মোঃ সোহাগ বলেন, “মাদক আর দেহ ব্যবসার পিছনে দীর্ঘদিনের লেনদেন, সিন্ডিকেট ও পৃষ্ঠপোষকতা থাকে। সামনের দিনগুলোতে এই নেটওয়ার্ক ভাঙতে আরও বড় ধাক্কা দরকার হবে। তবে শুরুটা নিঃসন্দেহে শক্তিশালী।”
কাশিমপুর থানা পুলিশ এক সংক্ষিপ্ত মন্তব্যে ওসি খালিদ জানান,“অভিযান চলমান আছে, থেমে থাকবে না। কাশিমপুরে অপরাধ–সিন্ডিকেট করার সুযোগ কারও থাকবে না – এটা স্পষ্ট বার্তা। স্থানীয়দের নিরাপত্তাই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার।”
দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, তথ্যভিত্তিক অভিযান ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
কাশিমপুরের স্হানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানার শ্রমিক ও ক্রাইম অ্যানালিস্টদের মতে, কাশিমপুরে দীর্ঘদিনের অপরাধ তৎপরতা দমনে দৃঢ় নেতৃত্ব ও ধারাবাহিকতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। নতুন ওসি’র কার্যক্রম স্থানীয়দের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনলেও – অপরাধচক্রের মূল অর্থনৈতিক উৎস, পৃষ্ঠপোষক ও রাজনৈতিক ছায়া ভাঙায় ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ বড়।
ওসি খালিদের যোগদানে কাশিমপুরে অপরাধ দমনের গতি স্পষ্টভাবে বেড়েছে, তবে টেকসই সফলতার জন্য প্রতিরোধ, পুনর্বাসন, আইনি শক্তিশালীকরণ ও কমিউনিটি পুলিশের সহযোগিতা – সবক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ জরুরি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
Leave a Reply