রাকিবুল ইসলাম সোহাগ -(জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর জীবন আহমেদ নিলয়)।
নিছক বিনোদনের উদ্দেশে ভিডিও তৈরি করেন জীবন আহমেদ নিলয় । দীর্ঘদিন প্রস্তুতি নিয়ে ২০১৭ সাল থেকে ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ শুরু করেন তিনি। সেসব ভিডিওর মধ্যে রয়েছে ভ্লগ, নাটক, কৌতুক। ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর তাঁর পোস্ট করা ‘ মোবাইল চোর’ নাটকটি এ পর্যন্ত দেখা হয়েছে ৪২ লাখ ৯৯ হাজারবারের বেশি, ‘আজব কক্সবাজার ’ দুই সপ্তাহে দেখা হয়েছে ১০ লাখ ৩০ হাজারের বেশি। এ ভিউয়ের ওপর ভিত্তি করে ইউটিউব থেকে সন্তোষজনক অঙ্কের অর্থ পাচ্ছেন জীবন আহমেদ নিলয় । জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইউটিউবে কনটেন্ট বানানোকে এখন অনেকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিচ্ছে। অথচ শুরুতে আব্বু-আম্মু এটাকে সহজভাবে নেননি। পরে তাঁরাও বলতে শুরু করেন যে খারাপ নয়। মানুষ যখন থেকে বলতে শুরু করল ভালো লেগেছে,
বাংলাদেশে ২০১৭ সাল থেকেই ইউটিউবের জন্য ভিডিও বানানো শুরু করেন। অনুপ্রেরণা ছিল বিদেশি ইউটিউবার, আর হাতিয়ার ছিল নিজের একটি স্মার্টফোন । শুরুর দিকে লোকে সেসব ভিডিও সহজভাবে নিতে পারেনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই চিত্র বদলে গেছে। জীবন বলেন, ‘যখন শুরু করি, তখন আমি কিছুই বুঝতাম না। কিন্তু এখন অনেক সাবধানে ভিডিও বানাই। মাথায় রাখি অশ্রাব্য শব্দ বা আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না, এ রকম কিছু যাতে ভিডিওতে না থাকে। কারণ, আমার মা-বাবা এসব ভিডিও দেখেন। লাখ লাখ মা-বাবা আমার ভিডিও দেখেন।’
জীবনের বাবা ঢাকার সনামধন্য একজন সফল ব্যবসায়ি । প্রায় প্রতি রাতে খাবার টেবিলে জীবনের দাঁড়াতে হয় বাবার কাঠগড়ায়। জীবন বলেন, ‘বাবা আমার সবচেয়ে বড় সমালোচক। এখনো তিনি আমার প্রতিটি ভিডিও দেখেন। প্রতিটি দৃশ্য ধরে ধরে সমালোচনা করেন। এটা করা ঠিক হয়নি, ওটা করলে ভালো হতো—এসব পরামর্শ দেন।
টানা তিন বছর মোবাইল দিয়ে ভিডিও তৈরির পর ২০২০ সালে ৪০ হাজার টাকায় একটি ক্যামেরা কেনেন জীবন । এখন তাঁর ভিডিও এডিট করার সহকারী আছেন, নিজের আয়ের টাকায় নিয়েছেন অফিস। তিনি বলেন, ‘যখন থেকে রোজগার শুরু করলাম, বাবার কাছ থেকে টাকা নেওয়া ছেড়ে দিলাম। আস্তে আস্তে আমার সাবস্ক্রাইবার বাড়তে শুরু করল। এরপর এই মাধ্যমে আরও নিবিড়ভাবে জড়িয়ে যান জীবন। করেছেন, কিন্তু টেলিভিশন তাঁকে ততটা টানেনি। ইউটিউবকেই যেন বেশি ভালোবাসেন আফ্রিদি। তাঁর ভাষায়, ‘ইউটিউব আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে।’
এই জীবন আহমেদ নিলয় সফল কনটেন্ট ক্রিয়েটর হওয়া এত সহজ ছিল না। শুরুতে তার এলাকার মানুষজনই তার সাথে অনেক হাসি মশকরা করেছে কিন্তু যখন আস্তে আস্তে তাকে চেনা শুরু করলো তখন সবাই ফ্যামিলি সহ তাকে বাহবা দিচ্ছে। জীবন আহমেদ আরও বলেন তার ইউটিউব এবং অনলাইন কনটেন্ট ক্রিয়েটরে যাএা এত সহজ ছিল না। শুধুমাত্র তার মা আর কিছু বন্ধু বান্ধব তার পাশে ছিল। তার মা তাকে চল্লিশ হাজার টাকা দিয়ে ক্যামেরা কিনে দেয়। ইউটিউবে সে ক্যান্টেন বানিয়ে এখন সে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী।
ভবিষ্যতে ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে চান। পড়তে যেতে চান নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমিতে, যেখানে পড়েছেন বলিউড তারকা রণবীর কাপুর। আর চান মা-বাবা তাঁকে নিয়ে গর্ব করুক।
Leave a Reply