র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ এর অভিযানে নারায়ণগঞ্জ এবং কুমিল্লা হতে অপহরণের মূলহোতা’সহ ০২ (দুই) জন অপহরণকারী গ্রেফতার এবং তাদের হেফাজত হতে অপহৃত নাবালিকা ভিকটিম উদ্ধার।বাং
লাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র, মাদক উদ্ধার, চাঞ্চল্যকর হত্যা, বিভিন্ন আলোচিত অপরাধীদের গ্রেফতার ও চাঞ্চল্যকর মামলা তদন্তে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধীদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতারের মাধ্যমে র্যাব ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
র্যাব-১১, সিপিএসসি, নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক একটি বিশেষ অভিযানে অদ্য ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখ নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হিরাঝিল এলাকা হতে শিশু সন্তানের মাকে বিবাহে ব্যর্থ হয়ে শিশু সন্তানকে অপহরণের মূলহোতা মাহবুর আলম @ পারভেজ (৪৬) ও কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানা এলাকা হতে অপহরণের সাথে জড়িত শাকিল আহমেদ রুবেল (৪৩)’দ্বয়কে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের হেফাজত হতে অপহৃত নাবালিকা ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী মাহবুর আলম @ পারভেজ ও নাবালিকা ভিকটিমের মা মাহমুদা সুলতান ইলু পরস্পর দুর সম্পর্কে খালাতো ভাই-বোন এবং একই এলাকার বাসিন্দা। একই এলাকায় বসবাসের সুবাধে তাদের একে অপরে বাসায় যাতায়ত ছিল। সম্প্রতি মাহমুদা সুলতান ইলু তার স্বামীর সাথে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় তার দুই সন্তানকে নিয়ে তার পিতার বাড়িতে বসবাস করে আসছিল। এরই সুযোগে মাহবুর আলম @ পারভেজ দীর্ঘদিন যাবত মাহমুদা সুলতান ইলুর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে। একপর্যায়ে মাহবুর আলম @ পারভেজ তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। মাহমুদা সুলতান ইলু তার দেওয়া বিবাহের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এতে মাহবুর আলম @ পারভেজ ক্ষিপ্ত হয়ে মাহমুদা সুলতান ইলু ও তার সন্তানদের অপহরণসহ গুম করা হুমকি প্রদান করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখ ভোর ০৫:৩৪ ঘটিকার সময় মাহবুর আলম @ পারভেজ তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন হতে নাবালিকা ভিকটিমকে ফোন করে ঘরের দরজা খুলতে বলে। নাবালিকা ভিকটিম সরল বিশ্বাসে ঘরের দরজা খুলে দিলে আসামী মাহবুর আলম @ পারভেজ তার সহযোগী আসামী শাকিল আহমেদ রুবেল এর সহায়তায় ভিকটিমকে ফুসলিয়ে ঘরের বাহির করে প্রথমে মাহবুর আলম @ পারভেজ বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার সহযোগী আসামী শাকিল আহমেদ রুবেল এর সহায়তায় কুমিল্লায় পাঠিয়ে দেয়। এই সংক্রান্তে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে প্রথমে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এবং পরে র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং নাবালিকা ভিকটিমকে সারাদিন খোঁজা-খুঁজি করে না পাওয়া নাবালিকা ভিকটিমের পিতা মোহাম্মদ খালেদুজ্জামান খান বাদী হয়ে উপরোক্ত ০২ (দুই) জন আসামীর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলা নং-০৮, তারিখ-০৭/১০/২০২৪ ইং ধারা-৭/৩০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধীত/২০২০) দায়ের করেন।
এই অপহরণের সাথে জড়িত মূলহোতা মাহবুর আলম @ পারভেজসহ অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১১, সিপিএসসি, নারায়ণগঞ্জ এর একটি চৌকশ গোয়েন্দা টীম যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে তাদের অবস্থান সনাক্ত পূর্বক জড়িতদের গ্রেফতার ও নাবালিকা শিশুকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণের মূলহোতা আসামী মাহবুর আলম @ পারভেজ (৪৬), পিতা-মৃত কামাল হোসেন, মাতা-সাহেদা কামাল, সাং-কদমতলী কলেজপাড়া, থানা-সিদ্ধিরগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জকে অদ্য ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখ নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন হিরাঝিল এলাকা হতে গ্রেফতার করতঃ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী স্বীকার করে যে, সে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখ অপরহণের সাথে জড়িত অপর আসামী শাকিল আহমেদ রুবেল (৪৩), পিতা-সাঈদ আহমেদ, মাতা-নাজমিন আক্তার, সাং-দ্বিতীয় মুরাদপুর, পোঃ-কান্দিরপাড়া, থানা-কোতয়ালী মডেল, জেলা-কুমিল্লাকে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পের সহায়তায় কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানার কান্দিরপাড়া এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয় এবং শাকিল আহমেদ রুবেল এর হেফাজত হতে নাবালিকা ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় ও উদ্ধারকৃত নাবালিকা ভিকটিম’কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply